Friday, December 6, 2019

সত্যিটা কি ?






আহা বেশ বেশ বেশ। চার চারটে রেপিস্ট এক সাথে সাবাড়। আহা বেশ বেশ বেশ। চার জনকে নিয়ে যাওয়া হলো ক্রাইম সিনে। আহা বেশ বেশ বেশ। এক সাথে চার জন পালাতে চাইলো। দারুন। সবাইকে একসাথে গুলি করে মেরে দেওয়া হলো। কি দারুন ব্যাপার। ক্রিমিনাল গট পানিশ্ড ইন লোকেশন অফ দেয়ার ক্রাইম। কিরকম লোম খাড়া হয়ে যায়। জাস্টিস ও চোখ থেকে কাপড় সরিয়ে , নিক্তি ফেলে বলছে , "অ্যাঁ" ।

হবে নাই বা কেন। আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে। অব তক ছাপ্পান দেখি আসে পাশে। পুলিশটার নাম কি ভাই। মেয়েরা তো ছবি রাখবে পকেটে , শিবের ছবির পেছনে ল্যামিনেট করে। ধনঞ্জয়ের ফাঁসির পর ব্যাপারটা সফ্ট ছিল। এটা এক্কেবারে মনের মতো। রেপিস্টদের ঠিক এরকমই হওয়া উচিত। ওদের বাঁচার অধিকার নেই। তুমি সাস্পেক্ট তাই তুমি খুনি। সমস্ত গলা মোমবাতির শপথ , আই লাভ মাই পুলিশ।

আই লাভ রাজনীতি টু। সত্যি এরা শ্রদ্ধার পাত্র। প্রতি দিন অন্তত ৯০টা মেয়ে রেপ হয়ে যাচ্ছে। মোমবাতি কজন পাচ্ছে। বছরে গড়ে ৫ টা। আর ফাঁসি হচ্ছে কজনের , জানিনা। যখনি সমস্যা সামনে এনে চোখ ঘুরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হয় , তখনই হয় নারীদের ওপর অত্যাচার। সারা দেশে অনেক সমস্যা। সত্যি বলছি অনেক সমস্যা। এতো বড় সমস্যায় একটা গোষ্ঠী কখনো একসাথে পড়েনি। অদ্ভুত এই সমস্যার সময় , মানুষকে আর মানুষের মাথা ঘোরানোর একমাত্র অস্ত্র চুলকে ঘা করে মলম লাগানো। মলম লাগানো চলছে। মি টু তে ফাঁসা হাজার হাজার সেলিব্রিটির এনকাউন্টার হবে না , নিত্যানন্দ আইল্যান্ড কিনবে আর ক্রাইম সিনে মুখ থুবড়ে পড়বে যার পেছনে রাজনীতি নেই।

কি সহজ মানুষকে মেরে ফেলা। কি সহজ বদলা নিয়েছি বলে নৃত্য করা। ভাবুক হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে কবিতা লিখতে ইচ্ছা করলো। পাশ দিয়ে যাওয়া একটা পিঁপড়ে চলে যেতে চাইছিলো। "তুই আমাকে কামড়াতে পারিস আর হয়তো কাউকে কামড়েছিস " দিলাম টিপে মেরে। মানুষের মতো নৃশংস কেউ হয় না। আর নৃশংসতার কারণ একেবারেই জানা যায়না। রেপ মোটিভ জানা , জনগণের শিক্ষাদান , ছেলেকে মানুষ করে তোলা , নারীর সমানাধিকার। সব বড় কঠিন ও দীর্ঘ প্রসেস। শুধু উত্তেজনা চাই , উত্তেজনা। রেপ হয়েছে , মোমবাতি জ্বালাও। রেপিস্ট এনকাউন্টার হয়েছে , বাড়িতে বাড়িতে মিষ্টি দিয়ে আসো।

মানুষ কখনো দৌড়াতে দৌড়াতে ভাবতে পারেনা। তাই বুদ্ধিমানেরা ( আমাদের রাজনীতিকরা ) তাই সবাইকে দৌড়াতে সাহায্য করে। একবার বসে ভাবুন। মানুষ হিসেবে। ওই মহিলার কথা যে মারা গেছে , একবার ভাবুন সেই মহিলাদের কথা যারা মারা যায়নি - লড়ে যাচ্ছে , একবার ভাবুন সেই মহিলাদের কথা যারা ঢোক গিলে বার বার রেপ হওয়ার জন্য তৈরী হচ্ছে , আর তারপর ভাবুন শেষ তাদের কথা কতবার ভেবেছেন। ক্রিসমাসে কেক খাবেন না , থার্টি ফার্স্ট এ মদ গিলে উদোম নৃত্য করবেন না , ভ্যালেন্টাইনে প্রেম খুঁজে বেড়াবেন না ---- সব ছেড়ে জ্বালান দেখি মোমবাতি। রোজ। ওই নব্বই টা রেপের জন্য , যা আজ হয়ে গেলো। পারবেন না , কারণ রাজনীতিকরা চায় না। আর আপনি মুরগি। আর তাই প্রমান করে দিয়ে গেলো উন্নাও এর মেয়েটি। আপনি তো বুঝতেও পারলেন না আপনার শরীরই আপনাকে খেতে দেওয়া হয়েছে।

ভেবে দেখুন এই এনকাউন্টারের কারণ। বেশি নাচবেন না। কিচ্ছু ভালো হয়নি। রেপিস্ট একটা মানসিকতা, এর প্রতিকার পিটিয়ে হয় না। হয় ক্রমপরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে। হায়দারাবাদের লোকগুলোর পয়সা ছিলো না তাই উন্নাওয়ের পয়সাওয়ালা ও ক্ষমতাসীন বাবার ছেলের রেপের ঘটনা চেপে দেওয়ার জন্য এই ঘটনার শিকার হলো। ভাবতে পারেনি যে মেয়েটা স্টেটমেন্ট রেকর্ড করানোর মতো ক্ষমতায় থাকবে। খবর পেতেই বাবার পার্টি অফিসে ফোন। পার্টির নাম আগুন লাগার আগেই ঘুরিয়ে দিতে হবে নজর অন্য দিকে। খোঁজ খোঁজ , কাকে কাটা যায়। যাকে কাটলে সারা দেশের ধন্যি ধন্যি তে স্টেটমেন্ট এর গোঙানি চাপা পরে যায়। দ্রুতগতিতে দিল্লী থেকে হায়দরাবাদে আদেশ পাঠিয়ে দেওয়া হলো এবং চার জনের জীবন নিয়ে নেওয়া হলো। এ কল্পনা যেন সত্য না হয়। কিন্তু খটকা আসে সকাল সাড়ে ছটার সময় নিয়ে। সে থাক, যদি সত্যি সত্যি পুলিশ প্রোগ্রেসিভ হয়, তাহলে কয়েকদিনের মধ্যেই উন্নাও এর রেপিস্ট দেরও একই ব্যবস্থা দেখতে চাই। কিন্ত শিক্ষার কিছু ফল আছে। একটু হলেও ভবিষ্যৎ দেখায়। কিস্যু হবে না।

আমি জানি ওপরে উঠতে হলে অনেকের রক্তে পথ পিচ্ছিল করে উপরে উঠতে হয়। তাই এই রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে আমি কিছু বলতে চাইনা। কিন্ত কোল্যাটারাল ড্যামেজের নাম করে নিজের আমোদের ভিকটিম কে বলি দেওয়াকে সমর্থন করতে পারিনা। মানুষ বড় অসহায়। এটা ক্ষমতার লড়াই, আর জনগণ এখানে ফেক গণতন্ত্রে বেঁচে আছে। এই হতাশায় শেষ করলাম , " আজ অগর তুম জিন্দা হো , কল কে লিয়ে মালা জপনা। "

যায় যায় হিন্দ