বই : উনিশ শতক বাঙালি মেয়ের যৌনতা লেখক : অর্ণব সাহা প্রকাশক : প্রতিভাস |
|
আদৌ কি মুসলমান আক্রমণ দায়ী মেয়েদের
দুর্দশার জন্য। এই
ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে একটা ট্যাবু মেরে আর নারীত্ব বাদ দিয়ে মাতৃত্ব কে বড় করে
দেবী টেবি বানিয়ে যা তা কেস মেয়েদের। এ
এক্কেবারে সবে মিলি করি কাজ। কোথায়
কামসূত্রের দেশ , আর কোথায় সেক্স ডিপ্রাইভড কান্ট্রি। হলোটা কি করে। কে
কে দোষী , কোন কোন যুগে কি কি ভাবে মেয়েদের অব্জেক্টিফিকেশন করা হয়েছে। আর কি ভাবে মেয়েরা ছিদ্র দিয়ে গলতে গলতে নিপুন থেকে দক্ষ হয়ে
উঠেছে, সেই নিয়ে পড়তে বেশ ভালো লাগে।
“সত্যবতী অম্বালিকাকে যখন বংশরক্ষার
জন্য ব্যাসদেবের নিকট যাইতে
পীড়াপীড়ি করিতেন , তখন কোনোও ভদ্রসন্তানই সভা পরিত্যাগ কোরিয়া চলিয়া যাইতেন না;
বরং সকলেই অম্বালিকার উত্তর শুনিবার জন্য উৎসুক হইয়া উঠিতেন।” হাতে ফুল নিয়ে টিভির সামনে দেখতে দেখতে তো কোথাও এইসব মনে
হয়নি মানুষের। পুরুষের
জন্য বেশ্যাপাড়া দীর্ঘসম্মত আর নারীর জন্য জিগোলো হতে এতো দেরি ??? ছেলেরাও মাংস
পিন্ড মেয়েরাও তাই। অথচ
কি এমন হলো যে অন্দরমহল বলে একটা তালা লেগে গেলো বাইরে থেকে। রেনেসাঁ ফেনেশা , ব্রাহ্ম টাম্ভ সব উত্তলিত হয়ে বটতলা হয়ে গেলো বন্ধ , আর মানুষ হয়ে গেলো
অন্ধ!!! অবাক করার মতো না ? ঠাকুর রা বাঙালি বানালো। নানা জায়গা থেকে সভ্যতা তুলে এনে সেলাই করে দিলো বাঙালির
মস্তিষ্কে। অথচ যৌনতাতেই
সেই বাবু কালচার। মেয়েরাও গোপনীয়তায় জিতে যেতে লাগলো
ঠাট , ঠমক , চটক, চাল , মিথ্যা , মান , কান্না , গাল দিয়ে। আর পুরুষের পেশী আর
স্ত্রীলোকের বুদ্ধি। সভ্যসমাজে কোনটা কোনটা বেশি লাগে শুনি হ্যাঁ। কুলীনপ্রথায়
বহুবিবাহের বিছানায় অনুপস্থিতিতেও জনসখ্যা বিস্তার কিন্তু থামেনি। থামেনি এই নিয়ে টাকার খেলাও। নারীর ব্যভিচারে গর্ভধারণ তো বুড়ো কুলীনগুলোর রোজগার। উফ
, এই পূর্বপুরুষের ভুলগুলো না থাকলে আজকের লিবারেল ছেলেগুলোকে মেয়েদের গালাগালি
আর শুনতে হতো না। সত্যি
বলছি, বইটা পড়তে পড়তে মহালয়ার তর্পন বন্ধ করে দিতে ইচ্ছা করছিলো। বলা হয়না যে সভ্যতায় নারীর কোনো
মূল্য নেই সেই সভ্যতারই কোনো মূল্য নেই। ইংরেজরা
শিক্ষিত জাতি হয়ে আরেক উচ্চশিক্ষিত জাতিকে দমন করবে কি করে। তাদের এক সফল আক্রমণ হলো মস্তিষ্কধর্ষণ। আর তাদের বিচিত্র
দর্শন আমাদের মধ্যে ঢুকিয়ে যৌনতা বিজ্ঞানে ঢুকিয়ে চটকে ফটকে ঘেঁটে দিলো মানুষের মানব সত্ত্বা কে । তৈরী করলো বাবু। মাতালেরা রাত্রিকালে মদ নাহি পায়। মৌতাতি মৌতাত বিনা হয় মৃতপ্রায়। কুলবতী পায় পতি সন্ধ্যার সময় , মনের আনন্দে গায় ব্রিটিশের জয়। কত আর বলবো। এতো
তথ্য এতো কন্সেপ্ট এর ভাঙা চোরা। এ বই যেন বই না ডিকশনারি নিশ্চয়। এবার বলি কারা পড়বেন। যারা মনে করেন নারী নরকের দ্বার। যারা মনে করেন এদের নিচে থাকাই উচিত। যারা মনে করেন আমার আছে তাই আমি শ্রেষ্ঠ , ওদের নেই তাই ওরা
নষ্ট। যারা ঠাকুরবাড়িকে পুজো করেন আর ঠাকুর পুজোয় পুরুত ডাকেন। যে পুরুষ মনে করে হস্তমৈথুন করলেই তো হয় , মাঝে মাঝে নারী
লাগে। যারা ঘরে বীরাঙ্গনা আর বাইরে বারাঙ্গনা রাখতে চান। যে স্ত্রীলোকে মনে করে পুরুষ শুধু পেষণ করে। যে নারী ভাবে তারা অবলা আর পুরুষ ক্যাবলা। তারা সত্যি বলছি এই বইটা পরে ব্যোমকে যাবেন। আর কারা পড়বেন না। হুম , যারা মনে করেন অশ্লীলতা যৌবনহানি করে। যারা বিজ্ঞের বিচি , আর পর্ন দেখে জ্ঞানগুরু। যারা গল্পের বই থেকেই জীবনে সমস্ত ডিসিশন নেয়। যারা ভাবে প্রচুর মেয়ে ঘেঁটেছি , সব জানি। যাদের সময় নেই। আর
যারা প্রথম জীবনে বই পড়বেন। লেখকের জন্য একটাই কথা। এইটা থেকে একটা সাত খন্ডের ইতিহাস রচনা হোক। আর ওই নববিবির ছলনা , ছেনালি , ছেলেমি , ছাপান , ছেমো আর
ছেঁচড়ামি বিস্তৃত হোক ব্যাখ্যায়। ইতি গজ। |
Wednesday, July 14, 2021
বইপড়া - উনিশ শতক বাঙালি মেয়ের যৌনতা
Subscribe to:
Posts (Atom)