এটা কি ঠিক করলে মা ? আমার মতে একদম না। এক্ষুনি কথা ফিরিয়ে নাও, নাহলে কিন্তু -- নাহলে কিন্তু - নাহলে কিন্তু। কি আর করবো।
দুঃখ পাবো। আই ডোন্ট কেয়ার ????? ইন্টারনেট
থেকে একটা ছবি তুলে আনবে আর আমার টোটাল এফোর্ট এ থুতু দিয়ে পোস্ট করে দেবে। এসব কি ভালো।
আমি কি বুঝতে পারিনা তুমি কতটা টায়ার্ড।
সারাদিন আমার পেছনে দৌড়ে , তারপর বাজার করে , তারপর অফিস করে তোমার যে কি হাল
হয় আমি তো দেখি। তুমি কি ভাব আমি বুঝিনা। আমি
সব বুঝি। তুমি চ্যাঁচালে বুঝি , তুমি দুঃখ
পেলে বুঝি , তুমি আনন্দে থাকলে বুঝি , স ও ও ও ও ব বুঝি। আমি তখনও তোমার সাথে ছিলাম মা যখন তুমি এটা পর্যন্ত
জানতে না যে আমি ছেলে না মেয়ে। আমি জানতাম
তুমি স্নান করতে কত ভালোবাস। এক এক ঘন্টা বাথরুমে যখন তুমি গান শুনতে শুনতে , আর গান
গাইতে গাইতে স্নান করতে তখন আমিও তাল দিতাম কিনা , তুমিই বলো। এখন তুমি পারোনা বুঝি। আমি না ঘুমালে তুমি কিছুই করতে পারোনা। কিন্তু আমি কি করি বল , তুমিই কিছুদিন পরে বলবে
আমার গ্রোথ ঠিক নেই। গ্রোথের জন্য আমাকে কত
কসরত করতে হয় তুমি কি জানো ? শুয়ে ঘুমালে আমি কি সময়ের কাজ সময়ে করতে পারবো ?
বাবা বলে না, আমি আর্মিন ব্রটের এক্সপেক্টেন্ট ফাদার
ফলো করে জন্মেছি। আমি তো তার মানে ভালো ছেলে। বইতে যেমন যেমন লেখা আছে ঠিক তেমন তেমন হয়েছে। তুমি আর বাবার কাছে সারপ্রাইস কিছুই ছিল না। সব বেস্ট কেস দিয়ে গেছে। বেরিয়ে এসে আমার একটু ল্যাজ গজিয়েছে বটে। কিন্তু তাহলেও অন্যদের তুলনায় আমি গুড বেবি। লম্বা বলে ওজন বাড়েনি। সময়ে হেসেছি, সময়ে হামা দিয়েছি , এবার প্রায় হাঁটতেও
শিখে গেছি , সময় হলেই দৌড়ে গিয়ে তোমার কোলে উঠে পড়বো। সরি বাবার।
বাবা মাঝে মাঝেই বলে না , ওকে আসতে বড় হতে বলো। আমি প্রথম তো সেই দিন হাঁটবো যেদিন বাবা আসবে। তাহলে
কেন আমায় এমন বলা।
আমি জানি আমি যখন ঘুমোই, তখন তুমি সমস্ত কাজ সেরে রাখো। তারপর অপেক্ষা করো আমার ওঠার। আমিও ঘাপটি মেরে পরে থাকি যতক্ষণ তুমি না কাজ শেষ
করে আমার পাশে এসে বস। তারপর আমি ভনিতা করে , আড়মুড়ি খেয়ে , হাত পা ভেঙে ঘুম থেকে
উঠে তোমায় আমার সেই স্পেশাল স্মাইলটা দিই।
আর তুমি খুশি হয়ে যাও। আমি কি তবে ভুল
ভাবি? তুমি কি আমার হাসির থেকে বেশি রেস্ট চাও ? আমি কিন্তু চাইনা। যখন ডে কেয়ারে তুমি নিতে আসতে তখন আমি সারাদিন খেলে
, না ঘুমিয়ে ভয়ঙ্কর টায়ার্ড হয়ে থাকতাম। কিন্তু তুমি যখন এক মুখ হাসি নিয়ে আমার সামনে এসে
হাত বাড়াতে , তখন সব ক্লান্তি এক নিমেষে শেষ হয়ে যেত। মনে হতো আবার নতুন করে দিন শুরু করেছি। এখন তুমি যদি সেটা ইন্টারপ্রেট করো যে আমি
"খাবার এসে গেছে " "খাবার এসে গেছে " বলে ঝাঁপাতাম। তাহলে আমার কিছু করার নেই। ওটা মিসইন্টারপ্রেটেশন। ঠিক তোমাদের রিলিজিওনের
মতো , সব ঠিক লেখা আছে অথচ ভুল ইন্টারপ্রেটেশনের জন্য এতো সমস্যা। আমায় ভুল ইন্টারপ্রেট
কোরো না মা।
তোমার কাজ কমানোর জন্য আমি কত চেষ্টা করি। তুমি যখন রান্না ঘরে থাকো তখন কি আমি তোমায় ডিসটার্ব
করি? হ্যা হামা দিতে দিতে তোমার আশেপাশে ঘুরি বটে , একটু জিনিসপত্র টানাটানি করি বটে
, আজকাল আই পি এল এর মরশুম বলে জিনিসপত্র ছুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলি বটে, কিন্তু ডিসটার্ব কখনো
করিনা। কক্ষনো না। আই স্বেয়ার , আই শপথ , বাবার আই ফোনের শপথ। তোমার কাজ কমাতে , হাগুমুতু এক সাথে সেরে ফেলি। আগে মনে আছে , কতবার তোমাকে ডায়পার পাল্টাতে হতো। এখন কি আর তা করতে হয়। আমি আমার রেচনপদ্ধতিতে যোগবলে
একটা ডিসিপ্লিন এনে ফেলেছি। তুমি আমাকে কোলে
নিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ( নেচে নেচে ) খাওয়ানোর বদলে টিভির সামনে বসিয়ে দাও। আমি তো মুখ বুঝে সেই অভ্যাস করে নিয়েছি নাকি। শুধু তো তোমার একটু টায়ার্ডনেস কমানোর জন্য। অন্য বাচ্চাদের মতো আমি সারা ঘর জিনিস ছড়াই না। হ্যা একটু এক্সপ্লোর করতে গিয়ে গন্ডগোল পাকিয়ে ফেলি
বটে , কিন্তু তুমি কি চাও তোমার ছেলে ডাম্ব তৈরী হোক। আগুন ছুঁয়ে দেখলে তবেই তো বুঝবো যে এক শিখার মধ্যে তিন টেম্পারেচারের তিন রঙের তিনটা আগুন আছে। একবার কাঠে , একবার কংক্রিটে , একবার কার্পেটে ধড়াম
করে না পড়লে কি করে বুঝবো যে কোনটা কি? তাতে একটু লাগে বটে , একটু কাঁদি বটে , একটু
জল বেরোয় বটে কিন্তু তুমি থাকলেই তো দু মিনিটে কান্না থামিয়ে হাসি দিয়ে দি।
ও হ্যা একটা জিনিস তো বেমালুম ভুলেই গেছি। আমার এই দৌড়ে বেড়ানোর জন্যে তোমার কতটা ওজন কমেছে
বলতো। যদি আমার হওয়ার সময় তুমি যেমন হিপোপটেমাস
হয়ে গেছিলে , এখন তো তুমি স্লিম ট্রিম ফিট
, সেটা কার জন্য। শোনো মা , আরাম হারাম হ্যায়। আমি আছি বলে তুমি ফ্রিতে জিম করছো। আর তুমি সেই জিম ট্রেনারকেই গালাগালি করছো।

আধ্যানের ডায়েরি চলতে থাকুক,ওর দুষ্টুমি চলতে থাকুক, দেয়ালা ভরে উঠুক আধ্যানের গল্পে... শুভেচ্ছা রইল.
ReplyDeleteThis comment has been removed by the author.
ReplyDelete